Apache IT

Web Development শিখতে কি কি লাগে ?

Web Development শিখতে কি কি লাগে

বাংলাদেশের নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য সম্পূর্ণ গাইড-লাইন 

বাংলাদেশে বর্তমানে Web Development শুধু একটি স্কিল নয়; এটি ক্যারিয়ার গড়ার অন্যতম সেরা মাধ্যম। অনেকেই জানেন না Web Development শিখতে কি কি লাগে এবং কোথা থেকে শুরু করতে হবে, বা কোন দক্ষতা গুলো গড়ে তুললে ভবিষ্যতে ভালো ক্যারিয়ার তৈরি করা যায়।

আজকের এই গাইডে আমরা খুব সহজ ভাষায় আলোচনা করবো যে Web Development শিখতে কোন স্কিল গুলোর প্রয়োজন, কোন টুলস ও টেকনোলজি লাগবে, এবং কীভাবে ধাপে ধাপে একজন প্রফেশনাল Web Developer হওয়া যায়।

 

Web Development শিখতে কি কি লাগে
Web Development শিখতে কি কি লাগে

Web Development শিখতে কি কি লাগে  নিচে উল্লেখ করা হয়েছে-

১. কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহার করার বেসিক জ্ঞান Web Development শেখার প্রথম ধাপ হলো কম্পিউটার ভালো-ভাবে ব্যবহার জানা।

 বিশেষ করে-

  • ব্রাউজার ব্যবহার
  •  ফাইল তৈরি/মুছা/মুভ করা
  • কিবোর্ড শর্টকাট জানা
  • সাধারণ সার্চ করতে পারা 

এসব দক্ষতা থাকলে শেখা অনেক সহজ হয়।

বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থী মোবাইল দিয়েও শেখা শুরু করে, কিন্তু Web Development cooding, ফাইল ম্যানেজমেন্ট ও টেস্টিং করার জন্য কম্পিউটার থাকা অবশ্যই জরুরি।

২. HTML – website বেসিক স্ট্রাকচার সম্পর্কে জানা:

 Web Development শিখতে চাইলে প্রথমেই শিখতে হবে HTML (Hyper Text Markup Language).

কারণ হলো:-

  • এটি দিয়ে website মৌলিক স্ট্রাকচার তৈরি হয়
  • টেক্সট, ইমেজ, বাটন, টেবিল, ফর্ম সবকিছু HTML দিয়ে তৈরি
  • যে কোন ওয়েবসাইট ১০০% HTML ভিত্তিক কাঠামোর উপর দাঁড়িয়ে থাকে।

HTML শেখা খুব সহজ, এবং মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই একজন শিক্ষার্থী বেসিক HTML আয়ত্ত করতে পারে।

৩. CSS : website-কে সুন্দর ও ডিজাইন করার জন্য ব্যবহার হয়।

HTML দিয়ে কাঠামো তৈরি হয়, আর CSS দিয়ে হয় ডিজাইন। বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্স মার্কেটে CSS-এর চাহিদা সবসময়ই বেশি। 

CSS জানলে আপনি-

  • Responsive website বানাতে পারবেন
  •  website কালার, ফন্ট, layout সেট করতে পারবেন
  •  Flexbox, Grid দিয়ে প্রফেশনাল ডিজাইন তৈরি করতে পারবেন।

এছাড়াও জনপ্রিয় বেশকিছু  CSS ফ্রেমওয়ার্ক রয়েছে। যেমন:-

  • Bootstrap
  • Tailwind CSS এগুলোও ব্যবহার করা হয়।

৪. JavaScript : ওয়েবসাইটকে ইন্টারঅ্যাকটিভ করার স্কিল ও মাধ্যম।

Web Development শিখতে কি কি লাগে একটি আধুনিক ওয়েবসাইট শুধু সুন্দর হলেই হয় না, সেটাকে ডায়নামিক ও ইন্টারঅ্যাকটিভ হতে হয়। আর এজন্য প্রয়োজন JavaScript। JavaScript শেখা মানে আপনি আরও এগিয়ে থাকবেন। 

কারণ এটি দিয়ে করা তৈরি করা যায় –

  • স্লাইডার
  • অ্যানিমেশন
  •  ডাইনামিক কনটেন্ট
  •  ফর্ম ভ্যালিডেশন
  • API ডেটা লোড এবং প্রায় সবই করা যায়।

বাংলাদেশে JavaScript ভিত্তিক চাকরি ও ফ্রিল্যান্সিং প্রজেক্ট প্রচুর থাকে। তাই এটি এখনকার সময়ে শিখা জরুরি।

৫. Backend Development : ওয়েবসাইটের সার্ভার সাইড স্কিল।

Fontend শেখার পর আসল কাজ শুরু হয় Backend। কারণ প্রায় সব ওয়েবসাইটই ডেটাবেস ব্যবহার করে, যেখানে ইউজারের তথ্য সংরক্ষণ হয়।

Backend-এর জন্য জনপ্রিয় ল্যাঙ্গুয়েজ হলো-

  • PHP (বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত)
  •  Python (Django/Flask)
  • JavaScript (Node.js)
  • Laravel (PHP-এর জনপ্রিয় ফ্রেমওয়ার্ক)

Backend স্কিল থাকলে আপনি –

  •  লগইন/রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম
  • ডেটাবেস
  • অ্যাডমিন প্যানেল
  • ই-কমার্স এবং অনেক কিছুই বানাতে পারবেন।

৬. ডেটাবেস (MySQL/SQL): জানাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ডেটাবেস ছাড়া কোন ওয়েবসাইট চিন্তাই করা যায় না। 

বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ডেটাবেস হলো-

  •  MySQL
  • MariaDB

ডেটাবেস জানলে আপনি:-

  •  ডেটা সংরক্ষণ
  • আপডেট
  • ডিলিট
  • ফিল্টার এবং অনেক কিছুই করতে পারবেন।

এগুলোই একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করার মূল ভিত্তি।

৭. Git & GitHub : কোড সেভ ও প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ।

Web Development শিখতে কি কি লাগে ?অনেকেই শেখা শুরু করে Git/GitHub ছাড়া, কিন্তু প্রফেশনাল হতে হলে এগুলো জানা খুব জরুরি।

GitHub দিয়ে আপনি যা যা করতে পারবেন-

নিজের প্রজেক্ট অনলাইনে সেভ করতে পারবেন, টিমে কাজ করতে পারবেন, ওপেন সোর্স প্রজেক্টে কাজ শিখতে পারবেন। বাংলাদেশে চাকরির ইন্টারভিউতে GitHub প্রোফাইল দেখে স্কিল যাচাই করা খুব সাধারণ বিষয়।

 

৮. VS Code : কোড করার সেরা এডিটর।

যদিও Notepade-এ কোড লেখা যায়, কিন্তু VS Code ওয়েব ডেভেলপারদের প্রথম পছন্দ।

এটির কারণ হলো –

  • অটো সাজেশন
  • কোড ফরম্যাটিং
  • এক্সটেনশন সাপোর্ট
  • ডিবাগিং , ইত্যাদি 

সবই এক জায়গায় পাওয়া যায়। প্রায় সব ওয়েবে devoeloper VS Code ব্যবহার করেন।

৯. ডোমেইন ও হোস্টিং সম্পর্কে ধারণা রাখা:

ওয়েবসাইট লাইভ করতে অর্থাৎ ব্যবহার যোগ্য করতে হলে লাগবে-

  •  ডোমেইন (যেমন- example.com)
  • হোস্টিং

বাংলাদেশে অনেক লোকাল কোম্পানি সাশ্রয়ী দামে হোস্টিং দেয়, যেমন-

  • XeonBD
  • Alpha Net
  • Hosting Bangladesh
  • IT Nut Hosting

ডোমেইন-হোস্টিং সম্পর্কে ধারণা থাকলে নিজে নিজে ওয়েবসাইট লাইভ করতে পারবেন, যা একজন devoloper এর জন্য বড় দক্ষতা।

 

১০. প্র্যাকটিস ও প্রজেক্ট বানানোর ক্ষমতা:

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো প্র্যাকটিস। বাংলাদেশের চাকরি বা ফ্রিল্যান্স মার্কেটে চাহিদা বাড়ছে। যারা কাজ দেখাতে পারে তাদের জন্য। স্কিল শুধু মুখে বললেই হয় না। আপনাকে ছোট ছোট প্রজেক্টও করতে হবে। যেমন –

  • পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট
  • ব্লগ সাইট
  • টুডু অ্যাপ
  •  ই-কমার্স টেমপ্লেট
  • নিউজ সাইট

এই প্রজেক্টগুলো GitHub-এ রাখলে আপনার প্রোফাইল আরও শক্তিশালী হবে।

১১. ইংরেজি পড়ার ন্যূনতম দক্ষতা:

বাংলাদেশে অনেক রিসোর্স বাংলায় থাকলেও, web development এর মূল ডকুমেন্টেশন শুধু মাত্র ইংরেজিতেই আছে।

তাই আমাদের প্রয়োজন-

  • Basic English reading
  • Google Search করতে পারা 

এইসব দক্ষতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

১২. শেখার রোডম্যাপ (বাংলাদেশ-বান্ধব):

নিচের রোডম্যাপটি অনুসরণ করলে ৪-৬ মাসেই আপনি প্রফেশনাল লেভেলে পৌঁছাতে পারবেন। নিচে মাস হিসেবে রোডম্যাপ উপস্থাপন করা হলো:

১ম মাস-
  • HTML
  • CSS
  • Basic Responsive Design
২য় মাস:
  • JavaScript
  • DOM
  • ES6
৩য় মাস:
  • Backend (PHP বা Node.js)
  • Database (MySQL)

৪-৬ মাস:

  • Framework (Laravel / React)
  • GitHub
  • Real Projects

এভাবে শিখলে বাংলাদেশে সহজে চাকরি, ফ্রিল্যান্সিং বা লোকাল ক্লায়েন্টের কাজ পাওয়া সম্ভব।

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখার জন্য খুব বেশি কিছু লাগে না কিছু বেসিক জ্ঞান, একটি কম্পিউটার, প্র্যাকটিস এবং সঠিক রোডম্যাপ। বাংলাদেশে এখন এই স্কিলের চাহিদা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি।যদি ধৈর্য ধরে শেখা যায়, তবে web devolopment আপনি পেতে পারেন-

  • চাকরি
  • রিমোট জব
  • স্টার্টআপ তৈরি করার ক্ষমতা
  • ফ্রিল্যান্সিং করার সুযোগ
এক কথায় বলা যায়, আজকের বাংলাদেশে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখলে আপনার ভবিষ্যৎ আরও উজ্জ্বল হতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top